ফাদার চার্লস যোসেফ ইয়াং ১৯০৪ খ্রীষ্টাব্দের ৩ জুন তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম ডানিয়েল ইয়াং ও মায়ের নাম মেরি জেনিংস। তাঁদের উভয়েরই পূর্বপুরুষদের আদি বাসস্থান ছিল আয়ারল্যান্ডে। বহু আগে তাঁরা অধিকতর সুখের সন্ধানে আয়ারল্যান্ড ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। চার্লসদের পূর্বপুরুষেরা এসেছিলেন ১৬২৫ খ্রীষ্টাব্দে। আর মেরি জেনিংসদের পূর্বপুরুষেরা এসেছিলেন এরও কিছুকাল পরে। 'ইয়াং' শব্দের অর্থ হচ্ছে তরুণ। কাজেই ইয়াংদের পরিবারের আদর্শবাণী হচ্ছে 'সদা তরুণ' থাকা অর্থাৎ সব সময় তরুণ থাকা। ফাদার ইয়াং তাঁর সারা জীবনের কথায় ও কাজে তরুণ ছিলেন।
ফাদার ইয়াং-এর বাবা ডানিয়েল ছিলেন নিউইয়র্কের অবার্ন শহরে একটি কারখানার কর্মী। এই কারখানায় কাজ পাবার পর তিনি মেরি জেনিংস-এর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দুইজনে মিলে একটি সুখী-সুন্দর পরিবার গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন। তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাঁরা দুইজনে মিলে কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন। তাঁদের ঘরে তিনটি সন্তান জন্ম নেয়। চার্লস ছিলেন তাঁদের মধ্যে তৃতীয়। চার্লসের মা মেরি তাঁর চতুর্থ সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় মৃত্যুবরণ করেন, সন্তানটিও মারা যায়। তাঁর অকাল মুত্যুতে চার্লসের বাবা অসহায় হয়ে পড়েন। কারখানায় কাজ করা ও সন্তানদের লালনপালন দুই কাজ একসাথে চালিয়ে যাওয়া ডানিয়েলের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। অনেকটা নিরুপায় হয়ে চালর্সের বাবা সন্তানদেরকে একটি অনাথ আশ্রমে রাখেন। কিছুদিন পর তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন এবং সন্তানদের তার কাছে নিয়ে আসেন।
চার্লসের বড়ো ভাই ফ্র্যাঙ্ক সেন্ট বার্নার্ড সেমিনারিতে কাজ করতেন। দুই বছর কাজ করার পর পড়াশুনার উদ্দেশ্যে তিনি অন্যত্র চলে যান। ভাইয়ের ছেড়ে দেওয়া সেমিনারির কাজটি চার্লস সাদরে গ্রহণ করলেন। এখানে তাঁর কাজ ছিল ফুট-ফরমায়েস, দারোয়ানগিরি এবং অন্যান্য ছোটোখাটো কাজকর্ম করা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার সময়ও তিনি ওখানে ছিলেন।
প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পার হয়ে চার্লস হাই স্কুলের পড়া শুরু করেন। তিনি নিউইয়র্কের সিরাকিউজে অবস্থিত দ্য মোস্ট হলি রোজারি হাই স্কুলে ভর্তি হন। স্কুলটি পরিচালনা করতেন ইম্মাকুলেট হার্ট অব মেরি সংঘের সিস্টারগণ। এই ধর্মপল্লীর পালক পুরোহিত ফাদার মেহন ছিলেন খুবই দয়ালু। তিনি চার্লসকে পবিত্র ক্রুশ সংঘে যোগ দিয়ে পূর্ববঙ্গে মিশনারি কাজে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন।
Read more